চ্যাটজিপিটি, বিশ্বের জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবট, বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পেশাজীবী—সবাইকে নানা বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে। রেসিপি, অ্যাসাইনমেন্ট, রিপোর্ট লেখা, প্রেম-পরামর্শ কিংবা কবিতা রচনা—সবকিছুতেই রয়েছে এর দক্ষতা।
তবে এই সুবিধার মাঝেও কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। কারণ, কিছু প্রশ্ন এমন আছে যা চ্যাটজিপিটির নীতিমালার বাইরে পড়ে এবং এই ধরনের প্রশ্ন করলে ব্যবহারকারী পড়তে পারেন বড় ধরনের ঝামেলায়। এমনকি অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধও হয়ে যেতে পারে।
চলুন জেনে নিই এমন কিছু প্রশ্ন বা বিষয় যা চ্যাটজিপিটিকে কখনোই করা উচিত নয়:
বিস্ফোরক তৈরির পদ্ধতি জানতে চাওয়া
কেবল কৌতূহলের বশেই হোক বা মজার ছলে, কেউ যদি চ্যাটজিপিটির কাছে জানতে চান কীভাবে বিস্ফোরক তৈরি করা যায়—তা মারাত্মক ভুল হবে। এই ধরনের প্রশ্ন অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং তা প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা নীতির লঙ্ঘন। এতে করে ব্যবহারকারীর অ্যাকসেস সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কাউকে হত্যার উপায় জিজ্ঞেস করা
চ্যাটজিপিটিকে কখনোই করা যাবে না এমন প্রশ্নের তালিকায় এটি সবচেয়ে ভয়ানক। এই ধরনের প্রশ্ন শুধুমাত্র এআই ব্যবহার নীতির লঙ্ঘন নয়, বরং সরাসরি অপরাধপ্রবণ মানসিকতার ইঙ্গিত দেয়। চ্যাটজিপিটি এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেবে না, বরং এমন আচরণ প্ল্যাটফর্মের নজরদারির আওতায় পড়ে যায়।
কারো ব্যক্তিগত তথ্য জানার চেষ্টা করা
চ্যাটজিপিটি কারো ব্যক্তিগত তথ্য—যেমন: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ফোন নম্বর, ঠিকানা—কখনোই প্রকাশ করে না। এমন প্রশ্ন করাও বিপজ্জনক হতে পারে। এটি ব্যবহারকারীর আচরণ সন্দেহজনক বলে চিহ্নিত হতে পারে, যা পরবর্তীতে প্ল্যাটফর্ম থেকে বাদ পড়ার কারণ হতে পারে।
পরীক্ষার সময় বা নিষিদ্ধ পরিস্থিতিতে চ্যাটজিপিটির ব্যবহার
অনেকেই পরীক্ষার সময় বা অন্য নিষিদ্ধ পরিবেশে চ্যাটজিপিটির সহায়তা নেন। এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতিমালার পরিপন্থী এবং ধরা পড়লে ব্যবহারকারী শাস্তির মুখে পড়তে পারেন। প্রযুক্তিকে মেধার বিকাশে ব্যবহার করা উচিত, অন্যায় সুবিধা নেওয়ার জন্য নয়।
চ্যাটজিপিটি সব ব্যবহারকারীর চ্যাট হিস্ট্রি সংরক্ষণ করে রাখে, যা নিরাপত্তা ও মান নিয়ন্ত্রণের অংশ। তাই কেউ যদি অপরাধপ্রবণ বা অনৈতিক কোনো প্রশ্ন করেন, ভবিষ্যতে সেটি তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করে তুললেও এর সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রত্যেক ব্যবহারকারীর দায়িত্ব। বিনোদন বা কৌতূহলের বশে কোনো ভুল প্রশ্ন যেন ‘মজা’ থেকে ‘সাজা’য় পরিণত না হয়—সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি।