পারস্পরিক স্বার্থে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে ভারত। এমনটি জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। শুক্রবার (২৭ জুন) নয়াদিল্লিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গঙ্গাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করি। এই বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে নিতে দুই দেশের একটি যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) রয়েছে।’ খবর দ্য হিন্দুর।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতে ভারতে কিছু সংশোধিত বাণিজ্যিক শর্ত প্রস্তাব করা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা বিষয়গুলোর একটি ন্যায্য সমাধান প্রত্যাশিত। এ বিষয়ে অতীতেও আমরা একাধিকবার গঠনমূলক বৈঠক করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।’
ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ধ্বংসের প্রসঙ্গে জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে কিছু কট্টরপন্থি ওই মন্দির ভাঙার দাবি তোলে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা না দিয়ে বরং ‘অবৈধ জমি ব্যবহারের’ অজুহাতে মন্দির ভাঙার অনুমতি দেয়। আমরা এই ঘটনায় গভীর হতাশা প্রকাশ করছি। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়, তাদের উপাসনালয় ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।’
এদিকে, চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিবেশী অঞ্চলে কী ঘটছে, আমরা তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কারণ এসব ঘটনা ভারতের স্বার্থ ও নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি দেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিজস্ব ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। তবে ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিও আমরা বিবেচনায় নিই।’
গত ১৯ জুন কুনমিংয়ে চীনের আয়োজিত ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপো ও ষষ্ঠ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের পররাষ্ট্র সচিবদের মধ্যে ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভারত জানিয়েছে, তারা এসব ঘটনার দিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এবং অঞ্চলভিত্তিক নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।