শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চ-টেবিল, চেয়ার আর বোর্ড সরিয়ে নিজের বসবাসের জন্য আসবাবপত্র স্থাপন করে শয়নকক্ষে পরিণত করেছেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩১০১ নম্বরের কক্ষটিতে বসবাসের জন্য বিছানা, এসি, ফ্রিজ, টিভি, আলনা, চেয়ার-টেবিল, কম্পিউটার, জুতাসহ ইত্যাদি যাবতীয় আসবাবপত্র রাখা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের সব আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলে রঙ করে শয়নকক্ষ হিসেবে বসবাসের উপযোগী করে তুলেছেন উপাধ্যক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজটির কর্মরত এক কর্মচারী বলেন, ’স্যার ,এখানে ২ বছরের বেশি সময় ধরে থাকছেন। বাড়ি ভাড়া পাইলেও ভাড়া বাড়িতে থাকে না। আজ কয়েকদিন হলো স্যার ছুটিতে বাড়িতে গেছেন।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরী আগে ফরিদপুরের রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে ২৯ লাখেরও বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের (দুদক) সহকারী পরিচালক সরদার আবুল বাসার ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট রাজবাড়ী বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি করেন। এদিকে আতাউল হকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আতাউল হক ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর ওই সময়ে তার বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারির পরে তাকে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে বদলি করা হয়।
বদলি হয়ে এসে প্রথম দিকে তিনি সরকারি কলেজের ডরমেটরিতে থাকলেও সর্বশেষ গত ২ বছর থেকে তিনি কলেজের ৩১০১ শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাস করছেন। এছাড়া তিনি সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়মিত বাড়িভাড়া বাবদ তার মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ পাচ্ছেন।
আতাউল হক খান চৌধুরীর বাড়ির কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চৌধুরী বাড়ি মহল্লায়। বর্তমানে কয়েকদিনের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় বসবাস করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরী বলেন,’ এটা আমি ঠিক করিনি। আমি আর সেখানে থাকব না।
আপনি সরকারি বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পর কেন থাকলেন ক্লাস রুমে থাকেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,’আমাকে অধ্যক্ষ স্যার থাকতে বলেছেন একা মানুষ দূরে কোথাও না থেকে কলেজে থাকতে বলছেন। আর এর আগেও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষক ছিলেন এখানে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মো.নাসির উদ্দিন বলেন,’ আমি থাকার অনুমোদন দেইনি। আমি বিষয়টি আপনার কাছে জানতে পারলাম, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।