ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন দীর্ঘ ছুটির পর আগামীকাল (রোববার) থেকে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে, হঠাৎ করে করোনা ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় অভিভাবকদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে, পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হতে পারে।
শনিবার (২১ জুন) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান আরটিভিকে জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আগামীকাল (রোববার) খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের পুরোপুরো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে, করোনা ও ডেঙ্গুর প্রকোপ যদি বেড়ে যায় এবং পরিবেশ-পরিস্থিতি যদি অনুকূলে না থাকে- তাহলে সরকারকে বিষয়টি জানানো হবে। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যবিধি সচেতনার বিষয়ে ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে। আমি নিজেও আজ চারটি জায়গায় মতবিনিময় করেছি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপও সমানতালে বাড়ছে। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা জরুরি হয়ে পড়বে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
এর আগে, করোনা রোধে গত ১৫ জুন একটি নির্দেশনা জারি করে মাউশি। এতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা এবং করোনা প্রতিরোধে পাঁচটি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাউশি জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ নির্দেশনার আলোকে দেশের স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ডেঙ্গু ও করোনা মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে দেশব্যাপী বিশেষ সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে হবে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আলোচনা সভা, র্যালি, দেয়াল পত্রিকা, পোস্টার তৈরি, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। ‘ডেঙ্গু সচেতনতা: ভবিষ্যতে করণীয়’ শীর্ষক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
এ ছাড়া, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় নিচের পাঁচটি নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে — সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। জনবহুল স্থানে যাওয়া এড়িয়ে চলা এবং বাইরে বের হলে মাস্ক পরিধান করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং অন্যদের থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে থাকতে হবে। চোখ, নাক ও মুখে হাত দেওয়ার আগে হাত পরিষ্কার করতে হবে। হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢাকতে টিস্যু, রুমাল বা কনুইয়ের ভাঁজ ব্যবহার করতে হবে।