ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার চলমান সামরিক উত্তেজনা এখন সম্ভাব্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, এই সংঘাত বিস্তৃত হলে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, মুসলিম ধর্মীয় উৎসগুলোতে এমন একটি যুদ্ধের পূর্বাভাস বহু পূর্বেই পাওয়া গিয়েছে, যা কেয়ামতের পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে বলেন:
“খোরাসান থেকে একদল সৈন্য কালো পতাকা হাতে উঠে আসবে। কেউ তাদের থামাতে পারবে না যতক্ষণ না তারা বায়তুল মুকাদ্দাসে সেই পতাকা উত্তোলন করে।”
[সূত্র: মুসলিম ইতিহাসবিদদের বিবরণ]
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়, খোরাসান, যা বর্তমানে ইরান, আফগানিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত, সেই অঞ্চল থেকেই মুসলিম বাহিনী উঠে আসবে। হাদিস অনুযায়ী, তারা আল আকসা মসজিদ (বর্তমান বায়তুল মুকাদ্দাস) বিজয় করে সেখানে কালো পতাকা উত্তোলন করবে।
বর্তমানে বায়তুল মুকাদ্দাস ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে। ১৯৮০ সালে ‘জেরুজালেম আইন’ পাস করে ইসরাইল এই শহরকে তাদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। যদিও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তবুও বাস্তবে জেরুজালেম এবং আল আকসা মসজিদের নিয়ন্ত্রণ এখনও ইসরাইলের কাছেই রয়েছে।
আরেকটি হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“তোমরা যখন খোরাসান থেকে কালো পতাকা আসতে দেখবে, তখন তাদের প্রতি সাড়া দিও। কারণ, তাদের মধ্যেই থাকবে আল্লাহর খলিফা ইমাম মাহাদী।”
এই দুই হাদিসের ভিত্তিতে অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ মত দিয়েছেন, এই যুদ্ধই হতে পারে “আল-মালহামা” বা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। একই সঙ্গে এটি কেয়ামতের আগমনের বড় আলামত হিসেবে গণ্য হবে এবং ইমাম মাহাদীর নেতৃত্বে একটি নতুন ইসলামিক খিলাফাত প্রতিষ্ঠার পথ খুলে যেতে পারে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৩ জুন শুরু হওয়া ইসরাইলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের সামরিক অভিযানে ইরানের সেনা কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। জবাবে ইরানও পাল্টা মিসাইল হামলা চালায়। বর্তমানে প্রায় প্রতিদিনই দুই দেশ মিসাইল বিনিময় করছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইসলামী হাদিসের আলোকে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন:
তাহলে কি কেয়ামতের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে? পৃথিবী কি এগিয়ে যাচ্ছে শেষ অধ্যায়ের দিকে?
এই প্রশ্নের নির্ধারক উত্তর একমাত্র আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতি মুসলিম বিশ্বে উদ্বেগের পাশাপাশি ধর্মীয় ব্যাখ্যা ও ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে নতুন করে ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।